এক ভরি সোনার আংটি, নীল-সাদা জামা, নীল রঙের কোট-প্যান্ট, সুগন্ধি, আলফানসো আম, সন্দেশ, দই, উত্তরীয় এবং ফুল! মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড়দের এমনটাই রাজকীয় সংবর্ধনা দিল রাজ্য সরকার। সৌজন্যে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করে ফিরে এসেছেন তিনি।
আইপিএলে নাইট রাইডার্সরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল যে, তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে এই সংবর্ধনায় অংশ নিচ্ছে সিএবি-ও। আংটির খরচ অবশ্য সিএবি বহন করেছে বলে খবর। রাজ্য সরকার খেলোয়াড় পিছু এবার খরচ ধার্য করেছে ২০ হাজার টাকা।
তাতেই বিতর্ক! নাইট রাইডার্সদের সংবর্ধনায় রাজ্য সরকার এত খরচ করায় প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। প্রথমত, রাজ্য সরকার নিয়মিতভাবে বেতন দিতে পারছে না সিএসটিসি, সিটিসি, এসবিএসটিসি, এনবিএসটিসি ইত্যাদি পরিবহণ সংস্থার কর্মীদের। বকেয়া মহার্ঘভাতা পাচ্ছেন না সরকারি কর্মচারীরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বারবার বলেছেন, টাকা নেই বলে উন্নয়নমূলক অনেক কাজ আটকে যাচ্ছে। অথচ, অর্থের অভাব থাকা সত্ত্বেও বিপুল খরচ করে কেন কলকাতা নাইট রাইডার্সদের সংবর্ধনায়! যেখানে একজন বাংলার খেলোয়াড়ও নেই। দ্বিতীয়ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরুরি ভিত্তিতে বাগডোগরা থেকে গতকাল রাতে কলকাতায় নিয়ে আসে একটি বিমান। একটি বেসরকারি সংস্থার ওই বিমানটি দিল্লি থেকে এসেছিল বাগডোগরা, সেখান থেকে কলকাতা। তার ভাড়া ঘণ্টায় আড়াই লাখ টাকা! অর্থাৎ দিল্লি থেকে বাগডোগরা হয়ে কলকাতা আসতে যতক্ষণ সময় লেগেছে, সেটা বাবদ মোটা টাকা গুনতে হবে। এখানেই শেষ নয়। এই বিমানটিতে চেপে মঙ্গলবার বিকেলে আবার উত্তরবঙ্গ চলে যাওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাই সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তা রেখে দেওয়া হয় কলকাতা বিমানবন্দরে। এ জন্য ঘণ্টা হিসাবে ভাড়া গুনতে হবে রাজ্য সরকারকে।
ফলে, এমন সুযোগকে ছাড়তে চাইনি বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির কটাক্ষ, ৩৪টি আসনে জিতেও দিদি বিজয়োৎসব করেননি। কারণ জানতেন, এই জয়ে জল মেশানো আছে। তাই ইডেনে জলসার আয়োজন করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছেন। অধীরের সুরেই সুর মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিয়েছেন বিরোধীরাও। কলকাতা